ঢাকা, শনিবার, অক্টোবর ১৮, ২০২৫ | ৩ কার্তিক ১৪৩২
Logo
logo

মুনিয়া হত্যা: আনিসুল হক তার বান্ধবীকে দিয়ে আনভীর সোবহান থেকে ঘুষ নেয়


আনন্দ খবর ডেস্ক     প্রকাশিত:  ২০ আগস্ট, ২০২৪, ০২:০৮ পিএম

মুনিয়া হত্যা: আনিসুল হক তার বান্ধবীকে দিয়ে আনভীর সোবহান থেকে ঘুষ নেয়

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর গুলশানে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচারে বাধা দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন মুনিয়ার বড় বোন নুসরাত তানিয়া।

মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও নুসরাত জাহান মুনিয়া হত্যার বিচার পাননি দাবি করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া। তিনি বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হয়েও আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে ছোট বোন মুনিয়া হত্যার বিচার চেয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি, কোথাও ন্যায়বিচার পাইনি।’ 

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে নুসরাত জাহান তানিয়া তাঁর এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘আমি জানতে পারি তৎকালীন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তাঁর বান্ধবী তৌফিকা করিমকে দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আনভীরের থেকে ঘুষ নিয়ে মামলা প্রভাবিত করার চেষ্টা করেন। আমি এসব ব্যাপারে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য একাধিকবার আবেদন করি এবং প্রায় ২৬ পৃষ্ঠার একটি চিঠি লিখে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করি। কিন্তু তিনি আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ দেননি।’ 

তিনি বলেন, ‘মুনিয়াকে মেরে ফেলার সংবাদ পাওয়ার পর আমি যখন গুলশান থানায় মামলা করতে গিয়েছিলাম, তখন থেকেই ভূমিদস্যু বসুন্ধরা পুরো রাষ্ট্রযন্ত্রকেই কিনে ফেলতে চেয়েছিল এই হত্যা ও ধর্ষণ মামলার ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার উদ্দেশ্যে। তৎকালীন আইজিপি বেনজির (বেনজির আহমেদ) এবং গুলশান থানার ওসি সুদীপ কুমার, আনভীরকে বাঁচিয়ে দেওয়ার জন্য নির্লজ্জ ভূমিকা রেখেছিল। পরবর্তীতে গুলশান থানা আনভীরকে অব্যাহতি দিয়েই তাদের তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। আমি আওয়ামী পরিবারের একজন সন্তান। আমার প্রয়াত বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন এবং তিনি কুমিল্লাতে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন।’ 

তানিয়া অভিযোগে বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি শেখ হাসিনার প্রশ্রয় না পেলে আনভীররা এতটা বেপরোয়া হয়ে ওঠার সাহস পেত না। পিবিআইতে যখন আমার মামলাটি গেল, সেখানেও তৎকালীন পিবিআই প্রধান বনজ কুমারকে ঘুষ দিয়ে একটি একপেশে তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে আসে বসুন্ধরা গ্রুপ। ওই রিপোর্টেও আনভীরসহ সকলকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আমি নারাজি জানানোর পর সেটা আদালতেও খারিজ হয়ে যায়। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো মুনিয়া গর্ভবতী ছিল, পিবিআই তাদের তদন্তেও বলেছে-সেটা ছিল আনভীরেরই সন্তান। অথচ সেই আনভীরকে তারা স্যাম্পল টেস্ট করতে বলল না।’ 

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘প্রশাসন মামলার অন্যান্য আসামি যেমন-সাইফা মিম ও পিয়াসাকে গ্রেপ্তার করলেও, আনভীরকে একটিবারের জন্যও জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেপ্তার করেনি। অর্থাৎ বিচারের নামে কী রকম তামাশা হয়েছে, সেটা নিশ্চয়ই আপনারা বুঝতে পারছেন। আমরা বিশ্বাস করি স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর, এই স্বাধীন বাংলাদেশে আমি ন্যায়বিচার এখন প্রত্যাশা করতেই পারি।’ 

এ সময় তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেন যেন-অবিলম্বে বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহ আলম ও তাঁর ছেলে আনভীরকে গ্রেপ্তার করে, মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার আসামি হিসেবে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন—মুনিয়া হত্যার বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন, অ্যাডভোকেট মাসুদ সালাউদ্দিন, অ্যাডভোকেট মানিক চন্দ্র শর্মা প্রমুখ।